সৌদি আরবের কাছে আক্রমণাত্মক অস্ত্র বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। তিন বছর আগে ইয়েমেন যুদ্ধ দমনের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তা তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত জানায়। যেসব অস্ত্রের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল তার মধ্যে আছে আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য সুনির্দিষ্ট কিছু ক্ষেপণাস্ত্র। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, কনভেনশনাল আর্মস ট্রান্সফার পলিসি কেস বাই কেস বিবেচনায় নিয়ে নতুন করে আমরা অস্ত্র হস্তান্তরের কথা ভাবছি। কংগ্রেশনাল একজন সহযোগী বলেছেন, এই সপ্তাহে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত কংগ্রেসকে জানিয়েছে প্রশাসন। একটি সূত্র নিশ্চিত করেছেন যে, এর ফলে আগামী সপ্তাহের শুরু থেকে অস্ত্র বিক্রি শুরু হতে পারে। এ বিষয়ে জানেন এমন একজন ব্যক্তি বলেছেন, অস্ত্র বিক্রির বিষয়টি শুক্রবার বিকেলেই জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। বাইডেন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেছেন, সৌদি আরব প্রস্তুত। আমরাও প্রস্তুত। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন জিও নিউজ। যুক্তরাষ্ট্রের আইনের অধীনে বড় আকারে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অস্ত্র বিষয়ক চুক্তি অবশ্যই পর্যালোচনা করতে হয় কংগ্রেসে। তারপর সেখানে চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে তা বাস্তবায়ন করা হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সৌদি আরবের কাছে এসব অস্ত্র দেয়ার বিধি সম্পর্কে প্রশ্ন তুলেছেন ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান আইনপ্রণেতারা। এক্ষেত্রে ইয়েমেন এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু ৭ই অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার পর এই বিরোধিতা কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য যখন টালমাটাল তখন ইয়েমেন ইস্যুতে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে। ২০২২ সালের মার্চ থেকে সৌদি আরব ও ইয়েমেনের হুতিরা জাতিসংঘের যুদ্ধবিরতিতে আছে। এ সময়ের মধ্যে ইয়েমেনে আকাশপথে কোনো হামলা চালায়নি সৌদি আরব। ইয়েমেন থেকে সৌদি আরবেও বড় কোনো হামলা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা বলেছেন, বেসামরিক জনগণের ক্ষতি কমিয়ে আনতে গত তিন বছর ধরে সৌদি আরবের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে বলে আমরা দেখতে পেয়েছি। ২০২১ সালে সৌদি আরবে অস্ত্র বিক্রিতে অবস্থান কঠোর করেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। তিনি ইয়েমেনে হুতিদের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের হামলার উদ্ধৃতি দিয়ে এই কঠোরতা অবলম্বন করেন। কিন্তু ৭ই অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার পর হুতিরা লোহিত সাগরে ও উপসাগরীয় অঞ্চলে বিভিন্ন জাহাজের ওপর হামলা চালাচ্ছে। এ কারণে হয়তো যুক্তরাষ্ট্র তার অবস্থান পরিবর্তন করছে। এর পর থেকেই সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক উষ্ণ হতে থাকে। রিয়াদের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি এবং বেসামরিক পারমাণবিক সহযোগিতা বিষয়ক চুক্তিতে আলোচনা করছে বাইডেন প্রশাসন।
Leave a Reply